জিওবি-ইউনিসেফ ক্যাটস (CATS-Community Approach to Total Sanitation) প্রকল্প
ইউনিসেফ ও পস্ন্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের একটি যৌথ উদ্যোগ
লক্ষীছড়ি উপজেলায় অবস্থিত এই ৩নং বর্মাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে ২নং দুল্যাতলী ইউনিয়ন পরিষদ শিক্ষা, সংস্কৃতি, খেলাধূলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। স্যানিটেশন ও হাইজিন বিষয়ে অগ্রগতি হলেও এই ইউনিয়নের মানুষের খোলা জায়গায় পায়খানা করার প্রবনতা বিদ্যমান ছিল। কোন কোন বাড়ীর লেট্রিনের পাইপ খাল বা খোলা স্থানের সাথে সংযুক্ত ছিল। লেট্রিন ব্যবহারের পরে ও খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে দুই হাত ধোয়ার অভ্যাস ছিল না। বাড়ীতে হাত ধোয়ার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে পানিসহ হাত ধোয়ার প্রযুক্তি ও সাবান ছিল না। কখন কখন সাবান দিয়ে হাত ধূতে হবে তাও বেশিরভাগ মানুষ জানত না। আর যারা জানত তারা পালন করতো না। স্কুলগুলোতেও স্যানিটেশনের অবস্থা নাজুক ছিল। স্কুল ল্যাট্রিনগুলো সঠিকভাবে ব্যবহৃত হতো না এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিলো। স্কুলের লেট্রিনগুলোতে পানি ও সাবানের ব্যবস্থা ছিলো না। হাত ধোয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন ব্যবস্থা ছিল না। ল্যাট্রিনে মেয়ে শিশুদের জন্য মাসিক ব্যবস্থাপনার সুবিধা নেই। কোন কোন স্কুলে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা নেই। আবার কোন কোন স্কুলে নিরাপদ পানির উৎসের সুবিধা থাকলেও সংগ্রহ থেকে পান করা পর্যমত্ম পানিকে নিরাপদ রাখার ব্যবস্থা নেই এবং স্বাস্থ্যাভ্যাসও চর্চা করা হয় না। স্কুলে ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য পরিবশে বান্ধব ব্যবস্থাপনা নেই।
উপরোক্ত অবস্থা থেকে উত্তরনের জন্য ইউনিসেফ ও পস্ন্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে জিওবি-ইউনিসেফ ক্যাটস (CATS–Community Approach to Total Sanitation)প্রকল্প গ্রহণ করে। জানুয়ারী ২০১৫ সাল থেকে সেপ্টেম্বর ২০১৬ সাল পর্যমত্ম ৩নং বর্মাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের নেতৃত্বে CATS প্রকল্পটি বাসত্মবায়িত হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের নেতৃত্বে অত্র ইউনিয়নকে শতভাগ খোলা জায়গায় মলত্যাগ মুক্ত ইউনিয়ন হিসেবে অর্জন করা হয়েছে। এই ইউনিয়নের মানুষ আর খোলা জায়গায় পায়খানা করে না, বাড়ীতে হাত ধোয়ার ডিভাইসসহ পানি ও সাবানের ব্যবস্থা আছে। স্কুলের লেট্রিন মেরামতসহ দলীয়ভাবে হাত ধোয়ার ডিভাইস স্থাপন করা হয়েছে। যার ফলে স্কুলে স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যশিক্ষার মাধ্যমে শিশুদের সঠিক স্বাস্থ্যাভ্যাস গড়ে তোলা এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যভ্যাসের ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে। গ্রাম ও স্কুলের সুন্দর পরিবেশে সুস্থ শিশু বিকশিত হবে স্বাচ্ছন্দে। সে হবে বুদ্ধিদীপ্ত, সুস্থ, সবল ও কর্মঠ নাগরিক। নিজ পরিবার, সমাজ ও জাতি গঠনে সে রাখবে অগ্রণী ভূমিকা। ইউনিয়নের স্যানিটেশন সংক্রামত্ম এই সার্বিক উন্নয়নে পস্ন্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাঅধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ অধিদপ্তর, ইউনিসেফ, উপজেলা প্রশাসন, গ্রীন হিল, আইসিডিপি (পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড) সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে।
ইউনিয়নে প্রকল্পের আওতাভুক্ত পাড়ার সংখ্যা : ২৬টি
প্রকল্পের আওতাভুক্ত লোকসংখ্যা : ৬,৭৫৩ জন
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা : ৫টি
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা : ৩৯০ জন
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা : ১টি
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা : ১৬৫ জন
মাদ্রাসার সংখ্যা : ০০
মাদ্রাসায় ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা : ০০
খোলা জায়গায় মলত্যাগমুক্ত পাড়া ও ইউনিয়ন অর্জনে এবং স্বাস্থ্যাভ্যাসের উন্নয়নের জন্য নিমেণাক্ত প্রধান কার্যাবলী বাসত্মবায়ন করা হয়েছে:
· এলাকার জনগণকে সাথে নিয়ে স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যাভ্যাসের বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও বিশেস্নষণ করে স্যানিটেশন মানচিত্র ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে বাসত্মবায়ন করা হয়েছে।
· জনগণকে সচেতন করার জন্য মিছিল, র্যালী, বাড়ী বাড়ী পরিদর্শন, উঠান বৈঠক, মা সমাবেশ করা হয়েছে।
· স্থানীয় লেট্রিন উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ লেট্রিন উপকরণসমূহ সহজলভ্য করা হয়েছে।
· ন্যাচারাল লিডার, কিশোর কিশোরী, শিশু, ধর্মীয় নেতা, কারবারী, হেডম্যানদের দক্ষতাবৃদ্ধিসহ সর্বসত্মরের জনগণকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।
· ইউনিয়ন পরিষদ সার্বক্ষণিকভাবে কার্যক্রমের অগ্রগতি মনিটরিং করে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন ওয়াটসান কমিটির সদস্যদের সাথে মাসিক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা সভা করা হয়েছে।
· পাড়া ও ইউনিয়নকে শতভাগ খোলা জায়গায় মলত্যাগমুক্ত অর্জন ও ঘোষনা করা।
স্কুল পর্যায়ে স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যাভ্যাসের উন্নয়নের জন্য নিমেণাক্ত প্রধান কার্যাবলী বাসত্মবায়ন করা হয়েছে:
· স্কুল ল্যাট্রিন মেরামত ও দলীয় হাত ধোয়ার ডিভাইস স্থাপন করা হয়েছে।
· স্টুডেন্ট কাউন্সিল পুন:গঠন করা হয়েছে।
· স্কুল স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যাভ্যাসের উন্নয়নের জন্য স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, শিক্ষা ও স্টুডেন্ট কাউন্সিল সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
· স্কুলে হাইজিন ক্যাম্পেইন করা হয়েছে (কুইজ/ বিতর্ক/ চিত্রাঙ্কন/রচনা প্রতিযোগিতা, নাটক, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান ইত্যাদি)।
· প্রতিটি স্কুলে তথ্য কর্ণার স্থাপন করা হয়েছে।
· স্যানিটেশন, দলীয় হাত ধোয়া ও নিরাপদ পানির প্রযুক্তি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, শিক্ষক ও স্টুডেন্ট কাউন্সিল সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং তহবিল গঠন করা হয়েছে।
বাসত্মবায়িত কার্যক্রমের ছবি:
|
|
ইউনিয়নে স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যাভ্যাসের তুলনামূলক চিত্র (শতকরা হার):
বিষয় | পূর্বের অবস্থা | বর্তমান অবস্থা |
---|---|---|
উন্নত লেট্রিন ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা | ১০% | ৫৫% |
হাত ধোয়ার ডিভাইস আছে এমন পরিবার সংখ্যা | ২% | ৪০% |
হাত ধোয়ার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে সাবান ও পানি আছে এমন পরিবার সংখ্যা | ১% | ৪০%
|
|
|
|
স্কুল পর্যায়ে স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যাভ্যাসের তুলনামূলক চিত্র (শতকরা হার):
বিষয় | পূর্বের অবস্থা | বর্তমান অবস্থা |
কার্যকরী লেট্রিন চেম্বার আছে এমন স্কুলের সংখ্যা | ১০০% | ১০০% |
দলীয়ভাবে হাত ধোয়ার ডিভাইস আছে এমন স্কুলের সংখ্যা | ০০ | ১০০% |
লেট্রিনে পানি ও সাবানের ব্যবস্থা আছে এমন স্কুলের সংখ্যা | ০০ | ৮০% |
কার্যকরী স্টুডেন্ট কাউন্সিল আছে এমন স্কুলের সংখ্যা | ০০ | ১০০% |
তথ্য কর্ণার (শী) আছে এমন স্কুলের সংখ্যা | ০০ | ১০০% |
প্রকল্প কর্তৃক বাসত্মবায়িত কার্যক্রমের অগ্রগতি:
ক্রম | কার্যক্রম | লÿ্য | অর্জন |
---|---|---|---|
খোলা জায়গায় পায়খানামুক্ত কার্যক্রম: | |||
১ | নতুন উন্নত ল্যাট্রিন স্থাপনকারী পরিবার সংখ্যা | ২৭৮ | ২৭৮ |
২ | অনুন্নত ল্যাট্রিনকে উন্নত ল্যাট্রিনে রূপামত্মরকারী পরিবার সংখ্যা | ১৪৩৩ | ৬৭৮ |
৩ | উন্নত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারী পরিবার সংখ্যা | ১৪৩৩ | ৯৫৬ |
৪ | খোলা জায়গায় পায়খানামুক্ত পাড়ার সংখ্যা | ২৬ | ২৬ |
৫ | খোলা জায়গায় পায়খানা মুক্ত পরিবেশে বসবাসকারী জনসংখ্যা | ৬৭৫৩ | ৩৭১৪ |
৬ | প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্থানীয় স্যানিটেশন উদ্যোক্তার সংখ্যা | ০ | ০ |
স্বাস্থ্যাভ্যাস কার্যক্রম: |
|
| |
৭ | স্বাস্থ্যাভ্যাস বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা | ৫ | ৫ |
৮ | স্বাস্থ্যাভ্যাস বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ন্যাচরাল লিডারের সংখ্যা | ১৮০ | ১৮০ |
৯ | স্বাস্থ্যাভ্যাসবিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কিশোর-কিশোরীর সংখ্যা | ৩০ | ৩০ |
১০ | হাত ধোয়ার ডিভাইস আছে এমন পরিবার সংখ্যা | ১৪৩৩ | ৫৭৩ |
১১ | হাত ধোয়ার স্থানে পানি ও সাবান আছে এমন পরিবার সংখ্যা | ১৪৩৩ | ৫৭৩ |
১২ | স্বাস্থ্যাভ্যাস বিষয়ে জ্ঞান লাভকারী /ধারণাপ্রাপ্ত জনসংখ্যা | ৬৭৫৩ | ৪৬৮০ |
১৩ | স্যানিমার্ট স্থাপনের সংখ্যা (স্বল্পমূল্যের স্যানিটারী ন্যাপকিন উৎপাদন) | ০ | ০ |
স্কুল পর্যায়ে অর্জন: | |||
১৪ | স্বাস্থ্যাভ্যাস কার্যক্রম বাসত্মবায়িত স্কুলের সংখ্যা | ৬ | ৬ |
১৫ | স্বাস্থ্যাভ্যাস বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সংখ্যা | ৭২ | ৭২ |
১৬ | স্বাস্থ্যাভ্যাস বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত রির্সোস শিক্ষকের সংখ্যা | ১২ | ১২ |
১৭ | স্বাস্থ্যাভ্যাস বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত স্টুডেন্ট কাউন্সিলের সংখ্যা | ৯০ | ৯০ |
১৮ | স্বাস্থ্যাভ্যাস বিষয়ে জ্ঞান লাভকারী ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা | ৫৫৫ | ৫৫৫ |
১৯ | প্রকল্প কর্তৃক হাত ধোয়ার ডিভাইস স্থাপনকৃত স্কুলের সংখ্যা | ৬ | ৬ |
২০ | প্রকল্প কর্তৃক স্যানিটারী ল্যাটিন মেরামতকৃত স্কুলের সংখ্যা | ৪ | ৪ |
২১ | গভীর নলকূপ স্থাপনকৃত স্কুলের সংখ্যা |
|
|
২২ | লেট্রিন, দলীয় হাত ধোয়া ও নিরাপদ পানির প্রযুক্তি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, শিক্ষক ও স্টুডেন্ট কাউন্সিল সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং তহবিল গঠন করা হয়েছে এমন স্কুলের সংখ্যা | ৩০ | ৩০ |
২৩ | তথ্য কর্ণার (শী) আছে এমন স্কুলের সংখ্যা | ৬ | ৬ |
২৪ | মেয়েদের জন্য স্যানিটারী প্যাডের ব্যবস্থা আছে এমন স্কুলের সংখ্যা | ০ | ০ |
স্বাস্থ্যাভ্যাসের উন্নয়ন, স্কুল ল্যাট্রিন মেরামত ও দলীয় হাত ধোয়ার ডিভাইস স্থাপনকৃত বিদ্যালয় সমূহের তালিকা:
ক্রমিক | স্কুলের নাম | স্কুলের ধরন (প্রাথমিক/মাধ্যমিক/ মাদ্রাসা) | স্বাস্থ্যাভ্যাসের উন্নয়ন করা হয়েছে | দলীয় হাত ধোয়ার ডিভাইস স্থাপন করা হয়েছে | লেট্রিন মেরামত করা হয়েছে | গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে |
1. | বর্মাছড়ি জুনিয়র হাই স্কুল | মাধ্যমিক | হ্যাঁ | হ্যাঁ |
|
|
2. | কান্ডপ পাড়া স: প্রা: বিদ্যালয় | প্রাথমিক | হ্যাঁ | হ্যাঁ | হ্যাঁ |
|
3. | মুক্তাছড়ি স: প্রা: বিদ্যালয় | প্রাথমিক | হ্যাঁ | হ্যাঁ | হ্যাঁ |
|
4. | ফুত্যাছড়ি স: প্রা: বিদ্যালয় | প্রাথমিক | হ্যাঁ | হ্যাঁ | হ্যাঁ |
|
5. | বিনাজুড়ি স: প্রা: বিদ্যালয় | প্রাথমিক | হ্যাঁ | হ্যাঁ | হ্যাঁ |
|
6. | লেলাং স: প্রা: বিদ্যালয় | প্রাথমিক | হ্যাঁ | হ্যাঁ | হ্যাঁ |
|
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস